ভূমিকা: মূত্রথলির ভেতরে ক্যালসিয়াম, ইউরিক এসিড, ফসফেট ইত্যাদি লবণ ও খনিজ জমে স্ফটিক (crystal) তৈরি হলে এবং তা সময়ের সাথে শক্ত পাথরে রূপ নিলে সেটিকে Bladder Stone বলে। এটি একটি সাধারণ ইউরোলজিক্যাল সমস্যা, যা যেকোনো বয়সের মানুষের হতে পারে তবে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এটি সাধারণত মূত্রথলির অভ্যন্তরে গঠিত হয়। এটি সাধারণত কিডনিতে গঠিত পাথরের চেয়ে ভিন্ন, কারণ কিডনির পাথর মূত্রনালীর মাধ্যমে মূত্রথলিতে নেমে আসে, আর মূত্রথলির পাথর সরাসরি মূত্রথলিতেই সৃষ্টি হয়। এই পাথর ছোট থেকে অনেক বড় হতে পারে এবং এর আকার ও সংখ্যা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে।
মুল কারণ: সোরা, সাইকোসিস
মূত্রথলির পাথর গঠিত হওয়ার পেছনে অন্যান্য কারণ সমুহ:
মূত্রথলির পাথরের লক্ষণ নির্ভর করে পাথরের আকার, সংখ্যা এবং অবস্থানের ওপর। ছোট পাথর সাধারণত কোনো লক্ষণ নাও দেখাতে পারে। তবে বড় পাথর বা যখন এটি মূত্রনালীতে বাধা সৃষ্টি করে, তখন নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে:
রোগ নির্ণয় (Investigation): Urine Routine & Culture Test, Ultrasound of KUB (Kidney, Ureter, Bladder), X-ray KUB, CT Scan (প্রয়োজনে)।
জটিলতা: বারবার ইউরিনারি ইনফেকশন, মূত্রথলির ক্ষতি বা প্রদাহ, প্রস্রাব আটকে যাওয়া (Urinary Retention), কিডনিতে ক্ষতি।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ও ঔষধ: হোমিওপ্যাথিতে রোগীর সামগ্রিক লক্ষণ দেখে ওষুধ নির্বাচন করা হয়। যেমন -
Berberis vulgaris – প্রস্রাবের পথে ব্যথা, প্রস্রাবের সাথে তীব্র জ্বালা, ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ।
Cantharis – প্রস্রাবে প্রচণ্ড জ্বালা, অল্প অল্প প্রস্রাব, রক্ত মিশ্রিত প্রস্রাব।
Sarsaparilla – প্রস্রাব শেষে তীব্র ব্যথা, বাচ্চাদের ক্ষেত্রে উপকারী।
Lycopodium – প্রস্রাব ধীরে ধীরে হওয়া, ডান দিকের কিডনি বা ব্লাডারের পাথরে কার্যকর।
Calcarea carb – ক্যালসিয়াম জাতীয় পাথরে ব্যবহৃত হয়।
মূত্রথলির পাথর প্রতিরোধ করতে নিম্নলিখিত অভ্যাসগুলো মেনে চলা যেতে পারে:
ভাবীফল: চিকিৎসা না করলে পাথর বড় হতে পারে, ইনফেকশন ও কিডনি ড্যামেজের ঝুঁকি থাকে। তবে সঠিক চিকিৎসা ও জীবনযাপন পরিবর্তনের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য।
করণীয়: পর্যাপ্ত পানি পান করা (প্রতিদিন অন্তত ২.৫-৩ লিটার), ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল পরিহার, লবণ ও প্রোটিন সীমিত গ্রহণ, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা।
নিষেধ: পানি কম খাওয়া, দীর্ঘ সময় প্রস্রাব চেপে রাখা, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, অতিরিক্ত মাংস, ভাজা ও ঝাল খাবার খাওয়া।
উপসংহার: মূত্রথলির পাথর একটি যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা হলেও প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার মাধ্যমে এটি সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। রোগীর উপসর্গ অনুযায়ী সঠিক ঔষধ নির্বাচন এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনলে ভবিষ্যতে জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
সূত্র: WHO, DGHS, হোমিও রেফারেন্স বইসমূহ থেকে সংগৃহীত;Gimini, ChatGPT (OpenAI)-এর সহায়তায় প্রস্তুতকৃত।
সংকলনে:ডাঃ ইবনে আসাদ আল মামুন,টাঙ্গাইল
এস এম আই ডি: EL 26; 20-7-2024:
Case: UB stone
লক্ষন:
১. তলপেটের ডান পাশে ব্যাথা।
২। সমস্ত পেটে গ্যাস হয়।
৩। ব্যথা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ব্যথার সময় বমি হয়।
৪। খাবার পর বমি হয়। বমির পর পেট ব্যথা কমে।
৫। ব্যথা ঠান্ডায় উপশম।
মানসিক অবস্থা : রাগী স্বভাব, সূচীবাই আছে, মনে হয় মারা যাবে। আবহাওয়া
কাতরতা: গরম কাতর।
খাবার: ঝাল প্রিয়, মাংস প্রিয়, গরম খাবার প্রিয়, মিষ্টি প্রিয়, দুধ অপ্রিয়। পিপাসা কম। প্রস্রাব: ঘন ঘন, জ্বালা করে, প্রস্রাবের শেষে জ্বালা করে।
মল: নরম কিন্তু পরিস্কার হয় না। সকালে ১ বার হয়।
Prescription:
20-7-2024: Barberis Vul 200+ CP 12X+ Lyco 1M
10-8-2024: Berbaris Vul 1M + MP 200x+ Cantharis 30
31-8-2024: Sarsaparilla 200+ CP 12X+ Barberis Aq Q
আলহামদুলিল্লাহ, পাথর বের হয়ে গেছে। -- ডাঃ মোঃ আল মামুন