logo

HOMOEOPATHY MEDICAL CENTER

সিরোসিস অব লিভার(Cirrhosis of Liver)



সিরোসিস অব লিভার চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি [ পড়া হয়েছে ( web counter) বার ]


সিরোসিস হল লিভারের একটি ক্রনিক রোগ। এই রোগে লিভারের স্বাভাবিক আর্কিটেকচার নষ্ট হয়ে যায়। ফলে লিভার তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। অনেকক্ষেত্রেই লিভার সিরোসিস থেকে লিভার ক্যান্সর দেখা দিতে পারে। এই রোগে আক্রন্ত রোগীর হেপটিক সেলগুলো নষ্ট গয়ে যায়, ব্লাড সার্কেলুশেন নষ্ট করে দেয়, রোগীর লিভার অন্তসারশূন্য হয়ে ধীরে ধীরে লিভার ছোট হয়ে যায়। লিভার সিরোসিস যকৃত বা লিভারের কোষ কলা এমনভাবে ধ্বংস হয়ে যায় যে তা সম্পূর্ণ বিকৃত ও অকার্যকর হয়ে পড়ে। ফলে যকৃতের যে সব স্বাভাবিক কাজ আছে, যেমন-বিপাক ক্রিয়া, পুষ্টি উপাদান সঞ্চায়, ঔষধ ও নানা রাসায়নিকের শোষণ, রক্ত জমাট বাধার উপকরন তৈরী ইত্যাদি কাজ ব্যাহত হয়। সিরোসিসের ফলে লিভারের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। লিভারের রক্ত প্রবাহ ব্লকেজ হয় এবং স্বাভাবিক বিপাকীয় এবং নিয়ন্ত্রন প্রক্রিয়ারোধ করে। য্ক্তুরাজ্যে প্রতি বছর প্রায় ৪০০০ সিরোসিস রোগী মারা যায়। এবং প্রায় ৭০০ মানুষ অবস্থার উপর ভিত্তি করে বেঁচে থাকার জন্য লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করে।

প্রকারভেদ (Classification)ঃ
এনাটমীক্যাল ভাবে লিভার সিরোসিস তিন প্রকার। যেমন-
1. মাইক্রোনোডুলার (Micronodular Cirrhosis)
2. ম্যাকক্রেনোডুলার সিরোসিস (Macronodular Cirrhosis)
3. মিক্সড টাইপ (মাইক্রো +ম্যাকক্রো + নোডুলার) Mixed form.


সিরোসিস অব লিভারের কারণ (Causes of Cirrhosis of Liver) ঃ-
মূল কারণ ঃ-
* সোরা
* সিফিলিস
* সাইকোসিস
* টিউবার কূলার ডায়াথেসিস


আধুনিক কারণ ঃ-
* দীর্ঘদিন এলকোহল বা মদ্যপানের অভ্যাস।
* তৈলাক্ত বা চর্বি জাতীয় খাদ্য।
* ধুমপান বা তামাক চিবানোর অভ্যাস।
* অতিরিক্ত রাত্রীজাগরনের অভ্যাস।
* অধিক খায় কিন্তু কম পরিশ্রম করে।
* ভাইরাল সংক্রমনের কারণে-ক্রনিক ভাইরাল হেপাটাইটিস যেমন-বি. সি. এবং ডি।
* ফ্যাটি লিভার (Fatty liver)
* স্থুলতা (Obesity)
* ডায়াবেটিস (Diabetes)
* হেরিডিটি- যেমন-সিষ্টিক ফাইব্রোসিস, হেমোক্রোমেটোসিস, উইলসন রোগ, গ্লাইকোজেন ষ্টোরেজ রোগ প্রভৃতি।
* মেটাবলিক ডিসঅর্ডার।
* ইমিউনোলজিক্যাল ফ্যাক্টর।
* বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ গ্রহণের কারণে।
* সংক্রমন যেমন-(Schistosomiasis)


লিভার সিরোসিসের লক্ষণ (Symptoms of Liver Cirrhosis)
* লিভার প্রথমে বড় হয় পরে ছোট হওয়া আরম্ভ করে।
* হস্ত পরীক্ষায় লিভারের Dull sound বিদ্যমান।
* দীর্ঘদিন ধরে অজীর্নতা কোষ্ঠবদ্ধতা।
* পুরাতন গ্যাষ্ট্রিাইটিস।
* উদরে জল জমে।
* জন্ডিস থাকে।
* শেষ দিকে অতৈতন্যভাব এবং প্রলাপ বকা বিদ্যমান।
* এনিমিয়া।
* ইডিমা।
* ইউটেনিয়াজ হেমোরেজ
* কনষ্টন্ড ফিভার।
* হেপাটিক ফেনসিস (গঠনগত পরিবর্তন)
* ক্ষুধামান্দ্য।
* বমি বমি ভাব বা বমি হয়।
* পেট ফাঁকা।
* পেট আস্তে আস্তে ফোলে এবং পা ফোলা থাকে।
* আস্তে আস্তে দুর্বলতা অনুভব করে।
* ওজন কমতে থাকে।
* রক্ত বমি।
* কালো আলকাতরার মত পায়খানা (Malaena)।
* ব্লিডিং হেমোরজ।
* পর্যায়ক্রমে কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়া।
* এমোনোরিয়া মাইলাদের।
* অবসাদ বা ক্লান্তি।
* সহজে রক্তপাত।
* চামড়ায় চুলকানি।
* চামড়া ও চোখ হলুদ বিবর্নতা হয়।
* এসাইটিস (Ascities)
* ত্বকে Spiderlike রক্তনালী।
* হাতে লাল ভাব।
* পুরুষদের testicular atrophy
* পুরুষদের স্তন পরিবর্তন হয়।
* শারীরিক ও মানসিক দুর্বলতা।
* নাক দিয়ে রক্ত পড়ে।
* হৃষ্পন্দন দ্রুত হয়।
* মাড়ি দিয়ে রক্তপাত।
* মাড়ি দিয়ে রক্তপাত।
* মাথাঘোরা।
* চুল পড়ে যায়।
* পেশীর ক্র্যাম্প (Muscle Cramps).
* ডান কাধে ব্যথা।
* প্রস্রাব গাঢ় হয়।
* হাটতে সমস্যা।
* লিভার এলাকায় ব্যথা হয়।


রোগানুসন্ধান (Investigation) ঃ-
* Blood CBC.
* LFT.
* USG of HBS.
* Liver Biopsy.
* Urine RME C/S
* Stool RME C/S


জটিলতা (Complication) ঃ
* হেমারাইটিং এনিমিয়া।
* হাশ্বেসিস অব পোর্টাল ভেইন।
* Spleenomegaly.
* Jaundice.
* টেষ্টিস ছোট হয়ে যায়।
* রক্তক্ষরণ।
* ঔষধের সংবেদনশীলতা।
* লিভার ফেলিউর।
* কিডনী ফেলিউর।
* লিভার ক্যান্সার।
* Gallstones.
* Hepatic encephalopathy.
* Esophageal varices.
* Splenomegaly.
* Edema and escites.
* Malnutrition.
* Bone disease.


ভাবীফল (Prognosis) ঃ-
সব সময় সিরোসিস অব লিভারের ভাবীফল খারাপ কিন্তু সঠিক চিকিৎসা করলে এবং সঠিক ঔষধ দিতে পারলে এবং স্বাস্থ্যের বিধি বিধান মেনে চলতে পারে তাহলে অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারে।

ব্যবস্থাপনা (Management)ঃ-
ঔষধ (Medicine) ঃ-সাদৃশ্য লক্ষনানুসারে নিম্নলিখিত ঔষধগুলো যোগ্যতাসম্পূর্ন হোমিওপ্যাথ এর পরামর্শ নিয়ে সেবন করা উচিত। যেমন-চেলিডোনিয়াম মেজাস (Chelidonium Majus), লাইকোপেডিয়াম (Lycopodium), নাক্স ভম (Nux-com), নেট্রাম সালফিউরিকাম (Natrum Suliphuricum), সোরিনাম (Psorinam), এসিটিকাম এসিডম (Aceticum Acidum), এন্টিমোনিয়াম টার্টারিকাম (Antimonium tartaricum), কার্ডুয়াস (Carduus M), মার্ক-সল (Merc-Sol), ব্রায়োনিয়া (Bryonia), পডোফাইলাম (Podophyllum) প্রভৃতি।
উপদেশ (Advice) ঃ-
পালনীয় (Should do) ঃ-
* পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে।
* স্বাস্থ্যকর পরিবেশে সববাস করতে হবে।
* নিয়ম শৃঙ্খলা ভাবে জীবন যাপন করা।

নিষেধ (Avoid) ঃ-
* এলকোহল বা মদ্যপান।
* ধুমপান বা তামাক চিবানো।
* অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সববাস।
* কম আলো-বাতাস পূর্ণ ঘরে সববাস করা।
* রাত্রীজাগরন।
* সকল প্রকার তৈলাক্ত বা চর্বিযুক্ত খাবার।
* অতিরিক্ত ব্যায়াম করা।
* অতিরিক্ত মানসিক ও শারীরিক পরিশ্রম।
* অতিরিক্ত লবন খাওয়া।
* অতিরিক্ত আয়রন জমা হয়ে গেলে-কলা, কচু, আয়রন বড়ি ইত্যাদি খাওয়া যাবে না।

পথ্য (Diet) ঃ-
* সহজপাচ্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া।
* টাটকা পরিস্কার শাক-সবজি।
* চর্বিহীন খাবার খাওয়া।
* প্রচুর পানি পান করা।
* দুধ, সাগু, বার্লি প্রভৃতি খাওয়া।

সুত্রঃ- ডাঃ এ আর খান

ধন্যবাদান্তে

logo

চিকিৎসক
ডাঃ ইবনে আসাদ আল মামুন
বিবিএ(মার্কেটিং-NU), ডিএইচএমএস, (ঢাকা)
গভ. রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক, নং- ৩৬৬৬৩
+8801772363283

"সর্বস্বত সংরক্ষিত© ২০২৩ এস এম হোমিওপ্যাথি মেডিকেল সেন্টার; ব্লগঃ ডিজাইনে SIAAM