গলব্লাডার (Gallbladder) ইংরেজি শব্দ যার অর্থ পিত্তাশয় বা পিত্তথলী। এটি নাশপাতির আকৃতির ফাঁপা অঙ্গ যা যকৃতের ডান খন্ডের নিম্নাংশে অবস্থান করে। এটি দৈর্ঘ্য প্রায় ৭-১০ সে.মি. এবং প্রস্থ ৩ সে.মি.। খাদ্য পরিপাকে ব্যবহারের জন্য একবারে প্রায় ৩০-৫০ মিলিমিটার পিত্তরস ধারণ করে রাখে। পিত্তের কারণে এটির রং গাঢ় সবুজ দেখায়। পিত্তাশয়কে গঠনগতভাবে ফান্ডাস, দেহ ও গ্রীবা এই তিন অংশে বিভক্ত করা হয়। এটি পিত্তনালীর মাধ্যমে লিভার ও ডিওডেনামের সাথে য্ক্তু।
পিত্তপাথুরী বা পিত্তাশয়ে পাথর হল পিত্তাশয়ের বা পিত্তথলীর একটি রোগ। গল্ডষ্টোন (Gallstone) ইংরেজি শব্দ যার অর্থ পিত্তপাথরী বা পিত্তাশয় পাথর। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটি কোলিলিথিয়াসিস (Cholelithiasis) নামে পরিচিত। পিত্তথলীর মধ্যে থাকে পিত্তরস বা বাইল (Bile)। এই বাইলকে তৈরী করে লিভার। পিত্তথলী বাইল সল্ট, ইলেক্ট্রলাইট বিলিরুবিন, কোলেষ্টেরল এবং অন্যান্য চর্বি সঞ্চায় করে রাখে। পিত্তরস বিশেষত বিলিরুবিনের মাধ্যেমে ক্ষুদ্রান্ত্রে চর্বি হজম এবং বর্জ্য পদার্থ সরিয়ে দিতে সাহায্য করে। আমাদের খাবার খাওয়ার পূর্বে পিত্তথলী বাইল বা পিত্তরসে পূর্ন থাকে। খাবার খাওয়া শেষ হলে গলব্লাডার বা পিত্তথলিটি চুপসে যায় অর্থাৎ পিত্তরস খাবারের সাথে মিশে খাবার হজমে সাহায্য করে। এই পিত্তরস সঠিকভাবে কাজ করতে না পারলে খাবার হজমে সমস্যা হয়। আর পিত্তশয়ে কোলেষ্টেরল, বাইল সল্ট ও বিলিরুবিনের পরিমান বেড়ে গেলে তৈরি হয় পিত্তথলীতে পাথর। অর্থাৎ পিত্তথলীতে পাথর হলে-পিত্তাশয়ে কোলেষ্টেরল, বাইল সল্ট ও বিলিরুবিনের সংমিশ্রনে গঠিত শক্ত সঞ্চিত পদার্থ।
উন্নত দেশে প্রায় ১০-২০% প্রাপ্ত বয়স্ক লোক এই রোগে আক্রান্ত। উন্নত বিশ্বে ৯০% পাথরসই কোলেষ্টেরল দিয়ে তৈরি বাদবাকি পিগমেন্ট পাথর। তবে অনেক সময় মিক্স পাথরও পাওয়া যায়। পিগমেন্ট পাথর এশিয়াতে বেশি পাওয়া যায়।
কলিলিথিয়াসিস দুই প্রকার যথা-
কলিলিথিয়াসিস এর ভাবীফল খারাপ নহে। রোগের প্রাথমিক অবস্থায় সঠিক রোগ চিহ্নিত করে সঠিক চিকিৎসা করলে অধিকাংশ রোগী আরোগ্যলাভ করে। রক্ষনশীল চিকিৎসায় ব্যর্থ হলে পাথরের সাইজ বড় হলে এবং রোগ জটিল প্রকৃতির হলে কলিসিসটেকটমী করতে হবে।
সাদৃশ্য লক্ষনানুসারে নিম্নবলিখিত ঔষধগুলো যোগ্যতাসম্পূর্ন হোমিওপ্যাথ এর পরামর্শ নিয়ে সেবন করতে হবে। যেমন- চেলিডোনিয়াম (Chelidonium M), চায়না (China), নাক্স ভমিকা (Nux v), কার্ডুয়াস মেরী (Carduas Mery), ক্যালকেরিয়া কার্ব (Calcerea Carb), বার্বারিস ভাল (Barbaris V), ভিরেট্রাম এলবাম (Viretrum Alb), ব্যাপ্টেশিয়া (Baptisia T), ফসফরাস (Phosphorus), সিপিয়া (Sepia), ইপিকাক (Ipicac), হাইড্রাসটিস (Hydrustis c), ব্রায়োনিয়া (Bryonia), ক্যামোমিলা (Chammomila), কলোষ্ট্রেনাম (Cholestrenum), ডায়াস্কোরিয়া ভিলোসা (Dioscorea V), নেট্রাম সালফ (Natrum Sulp) প্রভৃতি।
[source: Dr.A R Khan]