logo

HOMOEOPATHY DOCTOR



🌿 পিত্তথলীর প্রদাহ (Cholecystitis)

পিত্তথলীর প্রদাহের ছবি

গলব্লাডার (Gallbladder) ইংরেজি শব্দ যার অর্থ পিত্তাশয় বা পিত্তথলী। এটি নাশপাতির আকৃতির ফাঁপা অঙ্গ যা যকৃতের ডান খন্ডের নিম্নাংশে অবস্থান করে। এটি দৈর্ঘ্য প্রায় ৭-১০ সে.মি. এবং প্রস্থ ৩ সে.মি.। খাদ্য পরিপাকে ব্যবহারের জন্য একবারে প্রায় ৩০-৫০ মিলিমিটার পিত্তরস ধারণ করে রাখে। পিত্তের কারণে এটির রং গাঢ় সবুজ দেখায়। পিত্তাশয়কে গঠনগতভাবে ফান্ডাস, দেহ ও গ্রীবা এই তিন অংশে বিভক্ত করা হয়। এটি পিত্তনালীর মাধ্যমে লিভার ও ডিওডেনামের সাথে য্ক্তু।

যখন কোন কারণে পিত্তাশয় (Gallbladder)-এর প্রদাহ হলে ডান দিকের উপরের পেটে তীব্র ব্যথা, বমি বমি ভাব, বা বমি হয় এবং মাঝে মাঝে জ্বর হয় প্রভৃতি উপসর্গের সৃষ্টি হয় তখন তাকে পিত্তশলীর প্রদাহ (Cholecystitis) বলে। অর্থাৎ পিত্তথলীর প্রদাহকে Cholecystitis বলে।

পিত্তথলীর প্রদাহের শ্রেণীবিভাগ (Classification of Cholecystitis)

পিত্তথলীর প্রদাহ দুই প্রকার। যথা-

  1. একিউট কলিসিস্টাইটিস।
  2. ক্রনিক কলিসিষ্টাইটিস।

একিউট কলিসিস্টাইটিস আবার দুই প্রকার। যথা-

  1. একিউট ক্যালকুলাস কলিসিষ্টাইটিস (Acute Calculus Cholecystitis).
  2. একিউট এক্যালকুলাস কলিসিষ্টাইটিস (Acute Acalculus Cholecystitis).

পিত্তথলী প্রদাহের কারণ (Causes of Cholecystitis)

প্রধান কারণঃ-

  • সোরা (Psora)
  • সাইকোসিস (Psychosis)

আনুসাঙ্গিক কারণঃ-

  • জেনেটিক (Genetic)
  • পিত্তথলীর কার্যকলাপ।
  • খাদ্যতালিকাগত অভ্যাস।
  • স্থুলতা।
  • পিত্তথলীতে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হলে।
  • মারাত্মক অসুস্থতা। যেমন- HIV or Diabetes.
  • গর্ভাবস্থায়।
  • হরমোন থেরাপি।
  • ওজন দ্রুত কমার কারণে।
  • লিভার বা অগড়ব্যাশয়ের টিউমার।
  • CVD ব্লকেইজ।
  • বাইল (Bile)-এ ইনফেকশন হলে।
  • মিউকাস দ্বারা অবরোধ সৃষ্টি হলে।
  • পিত্তরস কর্তৃক যদি রাসায়নিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
  • কোন কারণ বসত: সিসটিক ডাক্ট গলব্লাডারের নেক অথবা কমন বাইল ডাক্ট-এ অবরোধ সৃষ্টি হলে।
  • কোন কারণ বশত অতিরিক্ত বাইল উৎপাদন হলে।
  • বড় ধরনের আঘাত ব্যাপকভাবে যদি পুড়ে যায় এবং অপারেশনের পরে।
  • কোন কারণ বশতঃ প্রদাহ হলে ও পূঁজ উৎপাদন হলে।
  • টাইফয়েড, প্যারাটাইফয়েড, ম্যালেরিয়া জ্বরের জটিলতার কারণে।
  • আন্ত্রিক জীবানুর ইনফেকশন হলে।
  • অবষ্ট্রাকটিভ জন্ডিস হলে।
  • পিত্তপাথুরীর কারণে সিষ্টিক ডাক্ট ব্লক হলে প্রদাহের সৃষ্টি করতে পারে।
  • টিউমারের কারণে।
  • ব্লিলিয়ারী Sludge-এর কারণেও হতে পারে।
  • সার্জারী।
  • মারাত্মক আঘাত বা পোড়া।
  • দূষিত রক্ত (Sepsis).
  • মারাত্মক অপুষ্টি।

পিত্তথলীর প্রদাহের লক্ষণ (Symptoms of Cholecystitis)

  • তীব্র পেটে ব্যথা।
  • পেটের উপরের অংশে অস্বস্তিবোধ।
  • ডান কাঁধে ও স্ক্যাপুলাতে ব্যথা।
  • ব্যথা ঘন ঘন হয় ( pain of Epigastric region, right upper quadrant).
  • প্রমে শূলবেদনাযুক্ত।
  • বমি বমি ভাব বা বমি হয়।
  • জ্বর হয় শীতসহ।
  • কিছু খাওয়ার পর সমস্যা দেখা দেয়।
  • ঘাম হয়।
  • ক্ষুধমিান্দ্য।
  • জন্ডিস দেখা দেয়।
  • ত্বক, চোখের সাদা অংশ জিহ্বার নিচে এবং প্রশ্রাব হলুদ হয়।
  • পেটে ক্রাম্প ও পেট ফোলে।
  • শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া।
  • চুলকানি।
  • অবিচল ব্যথা (Steady paid)
  • ৩০-৫০ বৎসরের ব্যক্তিরে বেশি হয়ে থাকে।
  • মহিলাদের ক্ষেত্রে বেশি হয়।
  • ব্যথা হঠাৎ আরম্ভ হয় আবার হঠাৎ কমে যায়।
  • টেনে ছিড়ে ফেলার ন্যায় ব্যথা।
  • ব্যাথা ৬ ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
  • অস্থির প্রকৃতির রোগী।
  • হৃদষ্পন্দন।
  • মার্সিস সাইন পজিটিভ।
  • ঢেকুর ওঠে।

রোগানুসন্ধান (Investigation)

  • Blood CBC.
  • CRP.
  • AFP.
  • LFT.
  • USG of whole abdomen.
  • X-ray.
  • CT Scan.
  • MRI.

ভাবীফল (Prognosis)

রক্ষনশীল চিকিৎসায় (৮০-৯০%) রোগীর আরোগ্য লাভ করে। যদিও পুনঃআগমনের সম্ভাবনা প্রায়ই দেখা যায়। ভাবীফল খারাপ নয়। রোগের প্রমাবস্থায় সঠিক চিকিসৎসা প্রদান করতে পারলে অধিকাংশ রোগী আরোগ্য লাভ করে।

জটিলতা (Complication)

  • পিত্তথলীর সংক্রমন।
  • পিত্তথলীর টিস্যু মরে যাওয়া।
  • কলিলিথিয়েসিস।
  • পেরিটোনাইসিস।
  • হেপাটাইটিস।
  • লিভার সিরোসিস।
  • লিভার ক্যান্সার।
  • হেপাটোমেঘানী।
  • পারফোরেশন।
  • এমপাইওমা।
  • ট্রাকিকার্ডিয়া।
  • উচ্চ জ্বর।

ব্যবস্থাপনা (Management)

ঔষধ (Medicine) ঃ-

সাদৃশ্য লক্ষনানুসারে নি¤ড়বলিখিত ঔষধগুলো যোগ্যতাসম্পূন হোমিওপ্যাথ এর পরামর্শ নিয়ে সেবন করতে হবে। যেমন-চায়না (China), ক্যালকেরিয়া কার্ব (Calcerea Carb), বার্বারিস ভালগারিস (Barbaric Vul), কার্ডুয়াস মেরীনাস (Carduas Merry), কার্বো ভেজ (Carbo Veg), ফসফরাস (Phosphorus), ডায়াস্কোরিয়া (Dioscorea V), সিয়োনেনথিস (Cianothus A) , হাইডাসটিস ক্যান (Hydrustis Can), ডিজিটালিস (Digitalis), বেলোডোনা (Bell), নেট্রাম ফস (Nat Phosh), প্রভৃতি।

উপদেশ (Advice):-

পালনীয়/করনীয়ঃ-

  • পূর্ন বিশ্রাম নিতে হবে।
  • স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে।
  • গরম স্যাক দিতে হবে।
  • প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম করা।
  • ওজন কমাতে হবে।

নিষেধঃ-

  • এলকোহল বা মদ্যপান করা।
  • ধুমপান বা তামাক চিবানো।
  • শক্ত খাবার।
  • অধিক পরিশ্রম করা।
  • সকল প্রকার চর্বিযুক্ত খাবার।
  • যখন প্রচন্ড ব্যথা থাকবে তখন মুখে খাবার দেওয়া যাবেনা।
  • উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার।
  • অতিরিক্ত মশলায্ক্তু খাদ্য।

পথ্যঃ-

  • সহজপাচ্য পুস্টিকর খাবার খেতে হবে।
  • ব্যথা কম থাকে কিন্তু যদি বমি উপস্থিত থাকে তবে -
    • নাসিকা পথে নল দ্বারা তরল খাবার দিতে হবে।
    • স্যালাইনের মাধ্যমে তরল খাবার দিতে হবে।
  • যখন বমি ও ব্যথা থাকে না তখন-
    • তরল খাবার বা পানীয় পান করতে হবে।
    • চর্বিবিহীন খাবার দিতে হবে।
    • টাটকা খাবার দিতে হবে।
    • দুধ ও ফলের রস খাওয়াতে হবে।

[source: Dr. aA R Khan]

🔼

হোম
"সর্বস্বত সংরক্ষিত© ২০২৩ এস এম হোমিওপ্যাথি মেডিকেল সেন্টার; ব্লগঃ ডিজাইনে SIAAM